ঢাকা, ১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার, ২০২৫ || ২৮ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
৮৪৯

সাব্বিরের সেঞ্চুরির পরও হোয়াইটওয়াশের লজ্জা  

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:২৮ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

সাব্বির রহমানের সেঞ্চুরির পরও নিউজিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পেল বাংলাদেশ। সিরিজের তৃতীয় শেষ ওয়ানডেতে কিউইদের কাছে ৮৮ রানে হেরেছে টাইগাররা। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ - ব্যবধানে জিতে নেয় কিউইরা। দলের ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতার মাঝেও ব্যাট হাতে ১০২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন সাব্বির। 

ডানেডিনে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ব্যাট হাতে নেমে ম্যাচে ভালো শুরু পায়নি নিউজিল্যান্ড। হেনরি নিকোলসের পরিবর্তে মার্টিন গাপটিলের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করেন কলিন মুনরো। নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের পরিবর্তে প্রথমবারের মতো সিরিজে খেলার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মুনরো। রান করে মাশরাফির বলে এলবিডব্লু হন তিনি।
প্রথম দুম্যাচে সেঞ্চুরি করা গাপটিল এবার আর বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে তামিম ইকবালকে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে চার ছক্কায় ৪০ বলে ২৯ রান করেন তিনি। 

দুই ওপেনার ৫৯ রানের মধ্যে ফিরে গেলেও মিডলঅর্ডার তিন ব্যাটসম্যান দলকে বড় স্কোরের পথে নিয়ে যান। নিকোলস-টেইলর ম্যাচের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লাথাম হাফসেঞ্চুরি করেন। নিকোলস-টেইলর তৃতীয় উইকেটে ৯২ রানের জুটি গড়েন। 

হাফসেঞ্চুরি তুলে বড় ইনিংস খেলতে থাকা নিকোলসকে ৬৪ রানে থামান অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। তামিমকে ক্যাচ দেয়ার আগে ৭৪ বলে ৭ চারে ৬৪ রান করেন এ ওপেনার।
হাফসেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে বড় ইনিংস খেলার পথে ছিলেন টেইলর। কিন্তু ৮২ বলে চারে ৬৯ রান করেন তিনি। রুবেল হোসেনের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে থামেন মিডলঅর্ডার। লাথামের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৫৫ রান যোগ করেন টেইলর। এই ইনিংস খেলার পথে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হলেন তিনি। দলীয় ২০৬ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে প্যাভিলিয়নে ফেরেন টেইলর।

এরপর দলের রানের চাকা দ্রুতই ঘুরিয়েছেন লাথাম-জেমস নিশাম কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। চার ছক্কায় ৫১ বলে ৫৯ রান করেন থামেন লাথাম। তবে শেষদিকে মারমুখী মেজাজে চার ছক্কায় ২৪ বলে ৩৭ রান করেন নিশাম। পঞ্চম উইকেটে লাথাম-নিশাম ৪১ বলে ৬৫ রানের জুটি গড়েন। তারপর দলকে রানের পাহাড়ে বসিয়েছেন গ্র্যান্ডহোম মিচেল স্যান্টনার। গ্র্যান্ডহোম চার ছক্কায় ১৫ বলে অপরাজিত ৩৭ স্যান্টনার ১টি ছক্কায় বলে অপরাজিত ১৬ রান করেন। ফলে ৫০ ওভারে উইকেটে ৩৩০ রানের সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের মোস্তাফিজুর রহমান ১০ ওভারে ৯৩ রানে উইকেট নেন। এছাড়া অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তুজা, রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মেহেদি হাসান মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।
 

জবাবে ম্যাচেও ব্যর্থ বাংলাদেশের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা। ২.১ ওভারে রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন তামিম ইকবাল, লিটন দাস সৌম্য সরকার। বল খেলে শূন্য রানে তামিম, বল খেলে রানে লিটন বল মোকাবেলা করে খালি হাতে ফেরত আসেন সৌম্য। তিনজনকেই ফেরত পাঠান স্বাগতিক পেসার টিম সাউদি। 

শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন মুশফিকুর রহিম মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ইনজুরির কারণে ম্যাচে খেলেননি প্রথম দুই ওয়ানডেতে হাফসেঞ্চুরি করা মোহাম্মদ মিথুন। তার পরিবর্তে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ পান মাহমুউল্লাহ। কিন্তু দুজনের কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। মুশফিক ১৭ মাহমুদউল্লাহ ১৬ রান করে ফেরেন। 

৬১ রানে মধ্যে উইকেট হারিয়ে আবারো বড় বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে ৯৪ রানে দ্বিতীয় ম্যাচে ৯৩ রানে উইকেট হারিয়েছিল সফরকারীরা। ১০০ রানের আগে / উইকেট হারানো ম্যাচ হারের প্রধান কারণ। অবস্থায় ধাক্কা সামলিয়ে উঠেন সাব্বির রহমান সাইফউদ্দিন। দেখেশুনে খেলে উইকেটে দ্রুতই সেট হয়ে যান তারা। এরপর সাবলীলভাবেই রান তোলার কাজটি করছিলেন। তাই শতরানের পর দেড়শ ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশের সংগ্রহ। ৫৯ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন সাব্বির। 

হাফসেঞ্চুরির পরও নিজের দক্ষতা সামর্থ্য দেখাচ্ছিলেন তিনি। এর মধ্যে সাইফউদ্দিনকে ৪৪ রানে থামিয়ে এই জুটিতে ভাঙ্গন ধরান ট্রেন্ট বোল্ট। গাপটিলের ক্যাচে পরিণত হবার আগে ৬৩ বলে ৪৪ রান করেন তিনি। ষষ্ঠ উইকেটে ১০১ রান যোগ করেছিলেন তারা। এজন্য ১১৭ বল মোকাবেলা করেন সাব্বির-সাইফউদ্দিন।

সাইফউদ্দিনের বিদায়ের পর উইকেটে গিয়ে রানের বেশি করতে পারেননি বাংলাদেশ দলপতি মাশরাফি। তবে সাব্বিরকে দারুণভাবে সঙ্গ দেন মিরাজ। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত কিছু শট খেলেন তিনি। চারে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য দেখাচ্ছিলেন মিরাজ। অপরপ্রান্তে রান তোলার কাজটা ভালোই করছিলেন সাব্বির। ৪৬তম ওভারের চতুর্থ বলটি স্কয়ার লেগে বল ঠেলে দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। ৫৭তম ওয়ানডেতে এসে তিন অংকে পা দিলেন এই হার্ডহিটার। 

সাব্বিরের সেঞ্চুরির আবহ থাকা অবস্থায় ওই ওভারের শেষ বলে থেমে যান মিরাজ। ৩৪ বলে ৩৭ রান করেন তিনি। এরপর খুব দ্রুতই বাংলাদেশের বাকী উইকেটের পতন ঘটে। ফলে ৪৭.২ বলে ২৪২ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন সাব্বির। ১২টি চার ২টি ছক্কায় ১১০ বলে ১০২ রান করেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের সফল বোলার ছিলেন সাউদি। ৬৫ রানে উইকেট নেন তিনি। ১৩৯ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিলেন তিনি। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবার। ম্যাচ সেরা হয়েছেন সাউদি। সিরিজসেরা হন নিউজিল্যান্ডের গাপটিল।
ওয়ানডে সিরিজ শেষে এবার তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড। প্রথম টেস্ট শুরু হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর